নবীন-প্রবীণ সমন্বয়ে ৭৩ তম ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলন
সোমনাথ লাহা
শীতের শহর তিলোত্তমা উৎসবমুখর। চলচিত্র উৎসব, বইমেলার পাশাপাশি এই শহরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে আছে সঙ্গীতের সুর লহরী। তাই হিমেল পরশ গায়ে মাখা কলকাতার সঙ্গীতপ্রেমীরা মুখিয়ে থাকেন যে ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলনের জন্য। এবার ৭৩তম বর্ষে পদার্পণ করল ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এই সম্মেলন। ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে ডোভার লেনে।
ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলনের হাত ধরেই বাঙালি সঙ্গীতপ্রেমীরা বুঁদ হয়েছেন ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁ, পন্ডিত রবিশঙ্কর, পন্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পন্ডিত শিবকুমার শর্মা, পন্ডিত যশরাজ, ওস্তাদ আমির খাঁ, ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খাঁ, ওস্তাদ আলি আকবর খাঁ, ওস্তাদ আমজাদ আলি খাঁ, ওস্তাদ জাকির হুসেনদের মতো দিকপাল শিল্পীদের সুরমূর্ছনায়।
বাঙালির রাত জেগে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সুরমাধুরীতে ডুবে যাওয়া ডোভার লেনের সঙ্গীত সম্মেলনের হাত ধরেই। প্রতিবছরের মত এবারেও আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারি নজরুল মঞ্চে চারদিন ধরে সারারাত ব্যাপী অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সম্মেলন। শহরের একটি অভিজাত ক্লাবের লনে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠানসূচির ঘোষণাও করেছেন উদ্যোক্তারা। এবারে মণিপুরী ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী ‘পদ্মশ্রী’ ইলম ইন্দিরা দেবীকে ‘সঙ্গীত সম্মান’ পুরস্কার দেওয়া হবে। এই প্রথমবার কোনও নৃত্যশিল্পীকে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। পাশাপাশি এবারের অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে প্রয়াত শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী ওস্তাদ জাকির হুসেন, ওস্তাদ আশীষ খাঁ এবং পন্ডিত রাজীব তারানাথ সহ অনুষ্ঠানের প্রথম চেয়ারম্যান প্রদীপ্ত শঙ্কর সেনকে।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক মনোতোষ মুখোপাধ্যায়, চেয়ারম্যান ব্রতীন্দ্র মুস্তাফি সহ তবলাবাদক পন্ডিত সমর সাহা, হারমোনিয়াম শিল্পী জ্যোতি গোহ, এই প্রজন্মের অন্যতম শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী রঙ্কিনী গুপ্ত এবং অঙ্কিতা যোশী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি, সঙ্গীতপ্রেমী তথা ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক সঞ্জয় বুধিয়া। উপস্থিত ছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী সোহিনী রায়চৌধুরী, পন্ডিত সন্দীপন সমাজপতি, বেহালাবাদক সঞ্জয় ঘোষ, তবলাবাদক আর্চিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চোদ্দো বছর বয়সী বিস্ময় বংশীবাদক অনির্বাণ রায়। ইতিমধ্যেই অনির্বাণের বাঁশির সুরধ্বনিতে মুগ্ধ হয়েছেন বহু বিখ্যাত মানুষজন।
এবারের অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে ব্রতীন্দ্র মুস্তাফি বলেন, “এবারের সঙ্গীত সম্মেলন আমরা নবীন-প্রবীণ দু’ধরণের শিল্পীদের নিয়েই করছি। প্রথিতযশা শিল্পীদের সঙ্গে নবীন প্রতিভাবান শিল্পীদের রাখার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন কর্মকান্ড আছে। ডান্স ফেস্টিভ্যাল, ট্যালেন্ট কনটেস্টের মতো বিষয়গুলিও রয়েছে।”
মনোতোষ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “আমরা সঙ্গীত সম্মেলনের পাশাপাশি ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক এবং ডান্সকে ঘিরে ট্যালেন্ট সার্চ প্রতিযোগিতার আয়োজনও করে থাকি। সেটি মূলত নভেম্বর-ডিসেম্বরে হয়। এটি রীতিমতো জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড থেকেও যোগদানের জন্য লোকজন আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এক কথায় এটি প্যান ইন্ডিয়ান স্তরে পৌঁছেছে। এছাড়াও আমাদের একাডেমিতে আমরা ভোকাল সহ মোহিনীয়াট্টম, কত্থকে মোট ৬০জন ছাত্রছাত্রীকে তালিম দিচ্ছি। আমাদের ট্যালেন্ট হান্টে প্রথম ও দ্বিতীয় হওয়া নবীন প্রতিভাবান শিল্পীদের পাশাপাশি বাইরের কয়েকজন ট্যালেন্টেড শিল্পীদের মূল অনুষ্ঠানে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এবারের অনুষ্ঠানে আমরা সেইরকমই দু’জন শিল্পী, কিশোর বংশীবাদক অনির্বাণ রায় এবং বেহালাবাদক সঞ্জয় ঘোষকে সুযোগ দিয়েছি। আমাদের এই অলাভজনক সংস্থার মূল উদ্দেশ্যই হল ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও নৃত্যের প্রচার ও প্রসার ঘটানো।”
এবারের ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলনে শিল্পীদের তালিকাও রীতিমত আকর্ষণীয়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতপ্রেমীদের মনকে তা আকৃষ্ট করবেই। শিল্পী তালিকায় রয়েছেন ওস্তাদ আমন আলি বঙ্গাশ(সরোদ), পন্ডিত উলহাস কসলকর (কন্ঠশিল্পী), ডঃ এস. বাল্লেশ ভজন্ত্রী (সানাই), রঙ্কিনী গুপ্ত (কন্ঠশিল্পী), কালাপিনি কমকলি (কন্ঠশিল্পী), বৈদেহী কুলকার্নি (কুচিপুড়ি), সঞ্জয় ঘোষ(বেহালা), সোহিনী রায়চৌধুরী (কন্ঠশিল্পী), প্রবীণ গোদখিন্ডি ও শাদাজ গোদখিন্ডি (বাঁশি যুগলবন্দি), পন্ডিত সাজন মিশ্র (কন্ঠশিল্পী), অনুপমা ভাগবত (সেতার), গীতা শিরিষা (ভারতনাট্যম), পন্ডিত সন্দীপন সমাজপতি (কন্ঠশিল্পী), পন্ডিত বিশ্বমোহন ভাট (মোহনবীণা), পদ্মিনী রাও (কন্ঠশিল্পী), পন্ডিত তরুণ ভট্টাচার্য (সন্তুর), ফিল স্কার্ফ (স্যাক্সোফোন), বিকাশ বাবু(সানাই), সুদীপ চক্রবর্তী (কত্থক), জয়ন্তী কুমারেশ(বীণা), ব্রিজভূষণ গোস্বামী (ধ্রুপদ), অঙ্কিতা যোশী(কন্ঠশিল্পী), শুভাশিস সব্যসাচী (ঘোষ) [পাখোয়াজ ও ডিভাইন ড্রামস]।

শিল্পীদের সঙ্গত করার জন্য থাকবেন পন্ডিত সমর সাহা (তবলা), পন্ডিত জ্যোতি গোহ (হারমোনিয়াম), পন্ডিত তন্ময় বোস (তবলা), পন্ডিত অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (তবলা), শুভজ্যোতি গুহ (তবলা), ইশান ঘোষ(তবলা), পন্ডিত পরিমল চক্রবর্তী (তবলা), রূপশ্রী ভট্টাচার্য (হারমোনিয়াম), রামকুমার মিশ্র(তবলা), পন্ডিত সনাতন গোস্বামী (হারমোনিয়াম) সহ অন্যান্যরা।
ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলন প্রসঙ্গে শিল্পপতি সঞ্জয় বুধিয়া বলেন, “শীতের উৎসবমুখর কলকাতাবাসীর কাছে পছন্দের তালিকায় সবার উপরে থাকে এই অনুষ্ঠান। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে অনেক মানুষই কলকাতায় আসেন। কী জন্য এসেছেন জিজ্ঞাসা করলে বলেন যে তাঁরা ডোভার লেন মিউজিক কনফারেন্স শোনার জন্য এসেছেন। এই অনুষ্ঠানের আকর্ষণ এমনই যে এর টানে শুধুমাত্র দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই নয়, বিদেশ থেকেও মানুষ আসেন। কিছু তারিখ ক্যালেন্ডারে সবসময় একই থাকে। যেমন ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো, সেরকম ২২-২৫ জানুয়ারি ডোভার লেন।” পাশাপাশি সঞ্জয় বুধিয়া আরও জানান, “আমরা যতই ওয়েস্টার্ন মিউজিক, ফিউশন শুনি না কেন একমাত্র ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতই আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিত এর প্রচার ও প্রসারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। ডোভার লেন সংগীত সম্মেলনের মঞ্চটা এমন যে এখানে কারও সুপারিশে সুযোগ পাওয়া যায় না। নিজের যোগ্যতায় একজন শিল্পী এই মঞ্চে পারফর্ম করে থাকেন। তাই তাঁরাও এই মঞ্চের প্রতি শ্রদ্ধাশীল যে এখানে পারফর্ম করার সুযোগ পেয়েছেন।”
ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলনে পারফর্ম করার সুযোগ পেয়ে রীতিমত আপ্লুত ও উচ্ছ্বসিত রঙ্কিনী গুপ্ত। তাঁর কথায়, “আমার কাছে এটা কোনও সম্মান প্রাপ্তির চেয়ে কম কিছু নয়। আমার জীবনের একটা পুরো বৃত্ত সম্পন্ন হতে চলেছে এর মধ্যে দিয়ে। ২০০০ এ মাত্র ষোলো বছর বয়সে এই মঞ্চে প্রতিযোগিতায় আমি ন্যাশনাল মেরিট লাভ করি। দীর্ঘ ২৫ বছর পর আবার সেই মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে পারাটা ভীষণ আবেগঘন মুহূর্ত আমার কাছে। ডোভার লেন নিয়ে আমার বলার ধৃষ্টতা নেই। এটা সূর্য-চাঁদ-তারাদের সমাবেশ। এর সূচনা সেই সময় যখন আমি জন্মাইনি। আমার বাবা-মা, দাদু-ঠাকুমা সকলেই এখানে আসতেন। আমার সৌভাগ্য হয়েছে এই সঙ্গীত সম্মেলনে অনেক দিকপাল ব্যক্তিত্বের সঙ্গীত শোনার। তাঁদের মধ্যে ওস্তাদ রাশিদ খান, ওস্তাদ জাকির হুসেন আজ আমাদের মধ্যে নেই। আমরা তাঁদের হারিয়েছি, যাঁরা আমাদের ভীষণ প্রিয় ছিলেন। এই মঞ্চটা নিজের যোগ্যতার গুণে আজকে এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। তাই এই মঞ্চে পারফর্ম করতে পারাটা একজন শিল্পীর কাছে বড় সম্মান প্রাপ্তির মতই।”
ডোভার লেনে পারফর্ম করার সুযোগ পেয়ে আবেগপ্রবণ অঙ্কিতা যোশীও। তাঁর কথায়,”আমার কাছে এটা ভীষণ আবেগময় অনুভূতি। আমার মন ভরে এসেছে। একসময় আমি আমার গুরু পন্ডিত যশরাজজির সঙ্গে অনেক বছর ধরে এখানে এসেছি। এবার এই মঞ্চে আমি এককভাবে গাইবার সুযোগ পাচ্ছি। কাকতালীয় ভাবে প্রতিবছর গুরুজি যে তারিখে গান গাইতেন সেদিনই আমি গান গাওয়ার সুযোগ পাচ্ছি। আমার মনে হয় এটা ওঁর আশীর্বাদ। যে কোনও সঙ্গীত সাধকের জন্য এই মঞ্চ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা। আশাকরি আমার সাঙ্গীতিক জীবনে চলার পথে আপনাদের সকলের ভালবাসা ও আশীর্বাদ আমি পাব।”
তবলাবাদক পন্ডিত সমর সাহা বলেন, “ডোভার লেন আমাদের কাছে দুর্গাপুজোর মতোই। সপ্তমী থেকে দশমী চারদিন পুজো হয়। দশমী অর্থাৎ ২৫ তারিখে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলে মনটাও খারাপ হয়ে যায়। আমি কিন্তু অনুষ্ঠানে রোজ যাই। আমার বাজনা থাক বা না থাক। ঠিক যেমন লোক পুজো প্যান্ডেলে আড্ডা মারে আমিও ডোভার লেনের প্যান্ডেলে সেভাবেই আড্ডা মারি। আজ থেকে ৩৪-৩৫ বছর আগে আমি এখানে বাজাতে শুরু করেছিলাম। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত আমি বাদ যাইনি। আগে তিনটে বাজাতাম, এখন একটা বাজাই।”

অঙ্কিতার গায়কি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার এটা ভেবে ভালো লাগছে যে ওর মতো একসময় অনেকেই যশরাজজির সঙ্গে আসত, গান গাইত। আজ তারা পুরোদস্তুর পারফর্মার। আমি অঙ্কিতার গান শুনেছি। খুব ভালো গান গায়। আমি ওকে একশোর মধ্যে একশো দিচ্ছি। এরপর আপনারা শুনে বলবেন আমি ঠিক বলেছি কিনা!” রঙ্কিনী প্রসঙ্গে তাঁর মত, “ওর গান আমি শুনিনি। তবে খুব ভাল গায় সেটা জানি। ওকে ১০০-তে ৯৯দিলাম। বাকি এক আপনারা দিয়ে দেবেন।” পাশাপাশি তাঁর অভিমত, ”আজকের বাচ্চাদের মধ্যে যথেষ্ট প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু সেই প্রতিভাকে তুলে ধরার জন্য ভাল গুরুর প্রয়োজন। গুরু প্রতিভা তৈরি করে দিলেও তাকে বিকশিত করার জন্য সঠিক প্ল্যাটফর্ম দরকার। আজকে মনোতোষ বাবুর মত মানুষেরা সঠিক প্রতিভাদের যেমন খুঁজে এনেছেন, তেমনই সঞ্জয় বুধিয়ার মত মানুষ যদি ডোভার লেনকে এগিয়ে দিয়ে তাদের পাশে না দাঁড়াতেন তাহলে এরা উঠতেই পারত না। তাই একজনের আরেকজনকে প্রয়োজন। আজকে যারা এখানে গান-বাজনা করছেন, ১৫-২০ বছর পর তাদেরও পৃথিবী জোড়া নাম হবে। এদের দেখলেও এয়ারপোর্ট থেকে ভিড় জমে যাবে এটা আমার বিশ্বাস।”
পন্ডিত জ্যোতি গোহর কথায়, ”১৯৮৪ থেকে এই সম্মেলনে সঙ্গত করছি। একটা সময় চারজন-পাঁচজন এমনকি ছ’জনের সঙ্গেও সঙ্গত করেছি। সেই সময় যে উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ডোভার লেনে সঙ্গত করতাম, এখনও সেই সিরিয়াসনেস নিয়ে সঙ্গত করি। প্রত্যেক বছরই আমার থাকত। এখনও থাকে একটা করে। সেটা খুব আনন্দের। এটা সবার থেকে আলাদা।”
এবার ডোভার লেনে ওস্তাদ সুজাত খানের সঙ্গে বাজানোর সুযোগ পেয়ে আপ্লুত ১৪ বছরের অনির্বাণ রায়। তার মতে, “সুজাত আঙ্কলের সঙ্গে বাজানোর সুযোগ পেয়ে আমি ভীষণ উৎসাহিত। উনি আমাকে ওঁর সঙ্গে বাজানোর সুযোগ দিয়েছেন সেইজন্য ওঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আমি ডোভার লেন নিয়ে বলার মত কেউ নই। আমি খুবই ছোট। আমি শুধু জানি এই মঞ্চের উপর ঈশ্বরের আশীর্বাদ সবসময় থাকে।”
বেহালা বাদক সঞ্জয় ঘোষের কথায়, “আমার গুরু ভি জি যোগ সাহেব। ডোভার লেনের মঞ্চে পারফর্ম করার সুযোগ পাব এটা আমার কাছে কল্পনার বাইরে। এমন সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই অভিভূত। এখানের কর্মকর্তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ আমাকে এতবড় মঞ্চে সুযোগ দেওয়ার জন্য। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব যাতে গুরুজির মান রাখতে পারি।”
অভিভূত কন্ঠশিল্পী সোহিনী রায়চৌধুরীও। তাঁর কথায়, “আমি পন্ডিত এ টি কানন ও মালবিকা কাননের ছাত্রী। এখন আমি তালিম নিচ্ছি ওস্তাদ মাসকুর আলি খান ও শ্রীমতী ডালিয়া রাহুতের কাছে সেমি ক্ল্যাসিক্যালের তালিম নিচ্ছি। ওনাদের এবং আমার বাবা-মায়ের আশীর্বাদের কারণেই আজকে এই জায়গায় পারফর্ম করার সুযোগ পাচ্ছি। এই স্বপ্নপূরণের মঞ্চে পারফর্ম করতে গেলে কঠিন পরিশ্রম ও সাধনার প্রয়োজন। আমি নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করব যাতে আমি আমার গুরুদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারি।”
এবারে ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলনের টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে আজ ২৫ ডিসেম্বর থেকেই। এবার টিকিটের মূল্য কিছুটা কম রেখেছেন উদ্যোক্তারা। এতে মিউজিক কনফারেন্সে কিছুটা প্রভাব পড়লেও তাঁরা বিষয়টি ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আশাবাদী। সবমিলিয়ে নতুন বছরে শীতে শহরের বুকে আরও একবার শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সুরে বুঁদ হওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনতে শুরু করবেন সঙ্গীতপ্রেমী মানুষজন।