বাংলাদেশকে ‘ই-মেডিকেল ভিসা’, হাসিনা মোদির একাধিক ‘মউ’
ভারতে চিকিৎসা করাতে আসা বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য ‘ই-মেডিকেল ভিসা‘ (e-Medical Visa) ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। শনিবার ভারতে সফররত বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে (Sheikh Hasina) সঙ্গে নিয়ে দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করেন মোদি। শুক্রবারেই দু’দিনের সফরে ভারতে এসেছেন বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, সরকারি তথ্য অনুযায়ী প্রত্যেক বছর কমবেশি ২৫ লক্ষ মানুষ চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে ভারতে (India) আসেন। এই পদক্ষেপ যে একটা বিরাট অংশের মানুষের জন্য লাভজনক হবে, বলাই বাহুল্য। স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও উন্নত করতে স্বাস্থ্য, চিকিৎসা এবং ওষুধ সংক্রান্ত চুক্তির পুনর্নবীকরণ করে মেয়াদ বাড়ানোও হয়েছে।
দুদেশের দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও উন্নত করার পথে এক সদর্থক পদক্ষেপ হিসেবেই হাসিনার এই সফরকে দেখছে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের জনগণের সুবিধার্থে রংপুরে (Rongpur) একটি সহকারী হাইকমিশন খোলার কথাও জানানো হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরেই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনেও বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নিতে তৎপর মোদি-হাসিনা।
দ্বিপাক্ষিক বেশ কিছু মউও (Memorandum of Understanding) স্বাক্ষরিত হয়েছে আজ বৈঠকে। দুই প্রতিবেশী দেশের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াতরা ও মাসুদ বিন মোমেনের উপস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ ডিজিটাল অংশীদারিত্বের জন্য একটি মউ (MoU) স্বাক্ষরিত হয়।
একইসঙ্গে স্বাক্ষরিত হয় ভারত-বাংলাদেশ ‘গ্রীন পার্টনারশিপ’ মউ। পরিবেশগত উন্নতির লক্ষ্যেই এই সমঝোতা। সহযোগিতার মাধ্যমে সামুদ্রিক নিরাপত্তা সুদৃঢ় করা এবং ‘ব্লু ইকোনমি’ ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ তৈরির লক্ষ্য নিয়েও হয়েছে সমঝোতা চুক্তি।
আরও পড়ুন: প্রথমবার ভোটে প্রিয়াঙ্কা, প্রচারে সঙ্গী মমতা
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করে আরও কৌশলী পদক্ষেপের উদ্দেশে এনডিএমএ (National Disaster Management Authority) এবং বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের (Ministry of Disaster Management and Relief) মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তির নবীকরণ করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষা বিভাগে সামরিক শিক্ষা এবং কৌশলগত সহযোগিতার লক্ষ্যে ওয়েলিংটনের ডিএসসিসি (Defence Services Staff College) এবং মিরপুরের ডিএসসিএসসি (Defence Services Command and Staff College) মধ্যেও একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।
আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ বৃদ্ধি ও পরিবহন আরও মসৃণ করতে ভারতীয় রেল মন্ত্রক ও বাংলাদেশের রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। উল্লেখ্য, সড়কপথে ভারত বাংলাদেশকে আরও সহজে যুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে ২০২১ সালের মার্চ মাসে ফেনী নদীর (Feni River) উপর মৈত্রী সেতুর (Maitree Setu) ‘ভার্চুয়াল’ উদ্বোধন করেছিলেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এই সেতু ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের রামগড়কে যুক্ত করবে। সূত্রের খবর, প্রায় ২ কিলোমিটার এই সেতু চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই চালু হয়ে যাবে।
এছাড়াও, ভারতের মহাকাশ সংস্থা (In-Space) এবং বাংলাদেশের আইসিটি ও টেলিকম মন্ত্রকের মধ্যে মহাকাশ প্রযুক্তি এবং স্যাটেলাইট যোগাযোগের উন্নতিকল্পে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সিইও শাহজাহান মাহমুদ এবং ভারতীয় মহাকাশ বিভাগের সচিব এস সোমনাথ।
সমুদ্রবিজ্ঞানে (Oceanography) যৌথ গবেষণা ও সহযোগিতার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় বর্মা এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান এক চুক্তিপত্রে সম্মতিসূচক স্বাক্ষর করেন।