ডিপফেকের শিকার কুমার শানু, সঙ্গে জুড়ল পাকিস্তান ও ইমরান খানের নাম
সোমনাথ লাহা
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিও তার নিজস্ব ডালপালা বিস্তৃত করছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্স তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেই প্রযুক্তির এক অন্যতম সংযোজন। শুরু থেকেই যেটি রয়েছে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। একের পর এক ঘটনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগের নিদর্শন হিসেবে প্রকাশ্যে এসেছে। শুধু তাই নয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে হলিউডের মত জায়গায় লাগাতার ধর্মঘট চলেছে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্সের সুযোগ নিয়ে ডিপফেক ভিডিওর রমারমায় শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক তারকারাই নন ভারতীয় অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও সমস্যায় পড়ছেন অবিরত। ইতিমধ্যেই প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, আলিয়া ভাট, ক্যাটরিনা কাইফ, কাজল, রশ্মিকা মন্দানার মতো প্রথম সারির অভিনেত্রীরা ডিপফেক ভিডিওর শিকার হয়েছেন।
এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল ‘মেলোডি কিং’ কুমার শানুর নামও। তবে সেখানেই শেষ নয়। কুমার শানুর সঙ্গে জুড়ে গেল প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও তাঁদের প্রাক্তন জেলবন্দি প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক ইমরান খানের নাম। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাত থেকে নিজের কন্ঠকে বাঁচানোর জন্য আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন গায়ক স্বয়ং। তার আগেই ডিপফেক ভিডিয়োর শিকার হয়ে গেলেন তিনি।
সমাজমাধ্যমে সম্প্রতি কুমার শানুর গানের একটি ভিডিও রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি করে। সেখানে দেখা যাচ্ছে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কারাবাসের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পাক মুলুকে আয়োজিত একটি কনসার্টে গান গাইছেন কুমার শানু। গায়কের পাকিস্তানের মাটিতে গণসমাবেশে গান গাওয়ার ভিডিওটি সঙ্গে সঙ্গেই ভাইরাল হয়ে যায় সমাজ মাধ্যমে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই জানা যায় পুরো বিষয়টি আসলে ভুয়ো। সেটি জানিয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে খবরও প্রকাশ করা হয়। সেই খবরের স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন শানু।

স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে পুরো বিষয়টি আসলে করা হয়েছে ডিপফেক ভিডিয়োর মাধ্যমে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টির উল্লেখ করে ভারত সরকারের কাছ আর্জি জানিয়েছেন গায়ক। এই বছরের গোড়ার দিকে অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত গায়কের একটি কনসার্টের ক্লিপিংস ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে এই ভুয়ো ভিডিওটি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুরাগীদের উদ্দেশ্য কুমার শানু লিখেছেন, “আমি সবাইকে জানাতে চাই পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জন্য আমি কখনও গান গাইনি। ফেসবুকে যে অডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে তা আমার কন্ঠ নয়, AI ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। একশ্রেণীর মানুষ আমার সম্মানহানি করার চেষ্টা করছে। তাই আমি আমার সমস্ত অনুরাগীদের বলতে চাই যে এই খবরটি ভুয়ো এবং মিথ্যে। এটা তথ্যপ্রযুক্তির গুরুতর অপব্যবহার এবং ভারত সরকারের কাছে আমার অনুরোধ AI এবং ডিপফেক প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করার জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। দয়া করে ভুল তথ্য ছড়াবেন না।”