একা বসে লেখাটাই আমার কাছে সব থেকে আনন্দের: প্রতিম
অতনু রায়
নতুন প্রজন্মের পরিচালকদের মধ্যে যে কজনের ছবির ভাষা খুব সাবলীল তার মধ্যে অন্যতম তিনি। সফল সাংবাদিক, সফল পরিচালক। প্রতিম দাশগুপ্ত। মুক্তি পেতে চলেছে ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনের প্রযোজনায় প্রতিম ডি. গুপ্ত-র নতুন ছবি ‘চালচিত্র‘। ছবি মুক্তির আগে পরিচালক একান্তে আড্ডা দিলেন বেশ কিছুক্ষণ।
প্রশ্ন: ছবির নাম ‘চালচিত্র’। চালচিত্র শুনলেই তো চোখের সামনে পুজোর দৃশ্য ভাসে। এ ছবির সঙ্গে পুজো কতটা জড়িত?
প্রতিম: ছবির টিজার এবং ট্রেলারে যেটা দেখিয়েছি, দেখবে একজন সিরিয়াল কিলার খুন করছে এবং মৃতদেহগুলোকে একটা চালচিত্রের মধ্যে বেঁধে দিয়ে চলে যাচ্ছে। ওই একচালা ‘স্ট্রাকচার’টা ছবির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এবং ছবিতে পুজো আসছে ব্যাপারটাও রয়েছে। দুটো বিষয়ের সঙ্গেই চালচিত্র শব্দটা খুব মানানসই। কারণ, চালচিত্র এমন একটা ‘ব্যাকড্রপ’, যাতে সবাই আছে। তাই ছবির ‘চালচিত্র’ নামটা আমার খুব মানানসই মনে হয়েছে।
প্রশ্ন: আমরা দেখেছি, তোমার ছবি ‘মাল্টিস্টারার’ হলেও প্রত্যেকটা চরিত্রের আলাদা জায়গা থাকে। কোনও চরিত্রই খুব একটা থাকতে হয় বলে আছে ধরণের হয় না। এই ছবির কাস্টিং-এর ক্ষেত্রে কী মাথায় রেখেছিলে?
প্রতিম: প্রথম যে ভাবনাটা আসে, চারজন পুলিশ একটা গ্রুপে থাকছে কিন্তু তাঁদের ‘এজ-গ্রুপ’ একদম আলাদা। একজন সবে জয়েন করেছে, যেটা শান্তনু (মহেশ্বরী) করেছে। একজন অবসরের মুখে, সেটা অনির্বাণদা (চক্রবর্তী) করেছেন। এদের ‘হেড’ হচ্ছে টোটা। ওঁর লাইফটা একটু ‘ফ্লড’, ১২ বছর আগের একটা কেস ওঁকে এখনও ট্রাবল দেয়। আর ইন্দ্রজিতের চরিত্রটা হচ্ছে, যে আগে মারে তারপরে কথা বলে। খুব মাসকিউউলার একটা চরিত্র। আমার এই বৈষম্যটা খুব দরকার ছিল। এঁদের স্ত্রী’র চরিত্রে যাঁরা রয়েছেন, যেমন টোটার স্ত্রী’র চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাইমা; এঁদের কাউকে ভেবে আমি স্ক্রিপ্টটা লিখিনি। শুধু শান্তনুর কথাটা ভেবে আমি চরিত্রটাকে মারওয়াড়ি করেছি। আসলে কলকাতা বেসড্ মারওয়াড়ি। ও নিজেও তাই। প্রথম ১৬ বছর কলকাতায় ছিল। তনিকা’কে (বসু) আমি অডিশন করে নিয়েছি। আর স্বস্তিকা’কে ‘ফাটাফাটি’ ছবিতে দেখে আমার মনে হয়েছিল যে শান্তনুর সঙ্গে ভাল মানাবে, সেই জন্য ওকে নিয়েছি। প্রিয়াকে অনেক দিন ধরেই চিনি। কানাডার মেয়ে, মুম্বইতে থাকে, বাঙালি। আমার মনে হয়েছে ইন্দ্রজিতের উল্টোদিকে ওকে নিলে ইন্টারেস্টিং হবে। আর রাইমা’কেও অনেকদিন ধরে চিনি। আমি তাঁদের সঙ্গেই কাজ করতে চেয়েছি যাঁদের আমি অন্যের ছবিতে দেখেছি অথবা ভাল করে চিনি। এঁদের সঙ্গে তো খুব কম সিনে কাজ করার সুযোগ, কারণ বেশিরভাগ সিন তো খুন, তদন্ত, ডিসকাশনের। বাড়ির ঘটনাগুলো কম। তাই কেউ যদি তিনটে সিন পায়, তাতেই যাতে সে চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে পারে এইরকম অভিনেত্রীদের খুঁজেছি এবং সেটাই পেয়েছি।

আরও পড়ুন: অভিষেককে বলেছি, তুই ইরফানের রোলটা করছিস – সুজিত সরকার
প্রশ্ন: তুমি একটু অন্য ধারার ছবি বানাও। কোট-আনকোট হার্ডকোর কমার্শিয়াল ছবি বানাও না। এই ছবিতে আমরা অপূর্ব’কে দেখছি। আমার অদ্ভুত লেগেছে। যাঁরা বাংলাদেশের কাজ দেখে থাকেন তাঁরা জানেন, অপূর্ব একদম ‘হার্ডকোর কমার্শিয়াল’ কন্টেন্টের মুখ। অপূর্বকে ভাবলে কেন?
প্রতিম: না, অপূর্বকে আমি ভাবিনি। এই চরিত্রটা আসলে একটা সময় আসে চারজন পুলিশকে তদন্তে সাহায্য করার জন্য। ছবিতে কিন্তু এই চরিত্রটার বেশ কিছুটা সময় পরে এন্ট্রি হয়। আমি কাকে নেব ভাবছি, তখন আমার প্রযোজক ফিরদাউসুল হাসান আমাকে বললেন, “তুমি অপূর্বকে একবার দেখতে পার। ও প্রচুর বিজ্ঞাপন করে, বাংলাদেশের ইদের নাটকগুলো করে।” আমাদের যিনি পোশাক করেছেন, সাবর্ণী দি, আমাকে বললেন, “তুমি অপূর্বর কথা ভাবতে পার, দারুণ অভিনয় করে।” তখন ওঁর কাজ দেখতে গিয়ে আমি দেখলাম, তুমি যেটা বললে, ওঁর মধ্যে একটা খুব ‘স্টারি ফ্লেয়ার’ রয়েছে। তখন আমি ভাবলাম, এই চরিত্রটার মধ্যে আমি যদি এটাকে ইনকর্পোরেট করতে পারি, মানে কথাবার্তা, সংলাপ, হাবভাব একটু ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ করতে পারলে ছবিটাও আরও ইন্টারেস্টিং হবে। কারণ টোটা, শান্তনু বা অনির্বাণ দার মধ্যে যে একটা ‘ম্যাট’ ব্যাপারটা রয়েছে…
প্রশ্ন: …অপূর্বকে দিয়ে তুমি ‘গ্লস’টা আনতে চাইছিলে…
প্রতিম: …হ্যাঁ, অপূর্বকে দিয়ে আমি ওই ‘গ্লস’টাই আনতে চাইলাম। মনে হল তাহলে ব্যালান্সটা খুব ভাল হবে। সেই ভাবনা থেকেই আমি অপূর্বকে যোগাযোগ করি। ওঁকে আমার কাজগুলো দেখতে বলি,.তারপরে ওঁকে আমি স্ক্রিপ্ট পাঠাই। ওর স্ক্রিপ্টটা খুব এক্সাইটিং লাগে।
প্রশ্ন: তোমার মত একজন পরিচালকের কাছে, যিনি মুম্বইতে থাকেন, সারা পৃথিবীর ছবি দেখেন, বাংলায় ছবি বানানো কতটা চ্যালেঞ্জিং? বিশেষত এমন একটা সময়ে, যখন ছবির ভবিষ্যতের বেশ টালমাটাল অবস্থা।
প্রতিম: চ্যালেঞ্জিং তো বটেই। একইসঙ্গে প্রচন্ড ডিমোটিভেটিং। যখন আমি এডিট করেছি বা ট্রেলার কেটেছি বা সাউন্ডের কাজ চলেছে, তখনও আমার সবসময় মনে হয়েছে, কেউ আসবে তো! ধরো, তুমি একটা কেক বানাবে। তুমি জানো যে, চারটে লোক কেক খায়। তুমি একটা বিষয়ে নিশ্চিত যে ওই চারটে লোক অন্তত তোমার কেকটা চেখে দেখবে। বাংলা ছবির ক্ষেত্রে তুমি জানো না যে তোমার কেকের শোকেসে কেউ আসবে কিনা! এটা কিন্তু সাংঘাতিক ‘ডিপ্রেসিং’ একটা ভাবনা। মানে তোমার ছবির মেরিটটা পর্যন্ত মানুষ পৌছাবেই না। এটা কিন্তু হতেই পারে। আমি অনেক ছবি দেখেছি যে পরবর্তীকালে মানুষ ওটিটিতে দেখে বলেছে যে, ভাল ছবি ছিল। আবার এরকম ছবিও হয়েছে যেটা হয়ত কোনও উৎসবের সময়ে রিলিজ করে প্রচন্ড হিট হয়েছে। পরে সেই ছবি যখন লোকে ওটিটিতে দেখেছে, বলেছে, বাবা! এই ছবিটা কী করে এত হিট করেছিল! আসলে পজিটিভ ব্যাপারটারই এখন খুব অভাব। পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে এবং সিনেমার ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে কোনও পজিটিভ কথা শোনা যাচ্ছে না। এটা খুবই ডিপ্রেসিং ব্যাপার। সবাই বলে, অনেক আলো হওয়ার আগে একদম নিকষ একটা অন্ধকার আসে। এটাই মনে হয় সেই সময়। এখান থেকে একদম ঘুরে দাঁড়িয়ে নতুন একটা জায়গায় বাংলা ছবি পৌঁছাবে, সেটাই আশা করতে পারি।

প্রশ্ন: এই ধরণের ‘মার্ডার মিস্ট্রি থ্রিলার’ ছবির চলন, ভাষা, ন্যারেটিভকে ‘এস্টাবলিশ’ করার ক্ষেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে তোমার ইনপুট কী ছিল?
প্রতিম: এই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর করেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র। কিন্তু আমি পুরো সময়টাই এর মধ্যে ঢুকে থাকি। এই ইন্সট্রুমেন্ট অফ করো, এই ইন্সট্রুমেন্টটা ঢোকাও এগুলো আমি সব সময় বলতে থাকি। তাই তুমি যখন ছবিটা দেখবে তোমার কিন্তু মনে হবে যে একটা গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর পাচ্ছ। তার সঙ্গে খুব সুন্দর একটা ‘ইন্ডিয়ানাইজেশন’ থাকবে। কোথাও সারেঙ্গী, কোথাও সানাই আছে সেই লোকাল ফিলটা দেওয়ার জন্য। কোনও জায়গায় হয়ত মানানসই ভাবে ঢাকের শব্দও ব্যবহার করা হয়েছে। দেবুদা খুব সুন্দরভাবে ব্যবহার করেছেন।
আরও পড়ুন: আমার প্রমাণের তাগিদ ছিল যে আমি ‘কন্ট্রোভার্সি আইটেম’ নয় – সীমা বিশ্বাস
প্রশ্ন: এখন তো অনেকেই ছবির সাউন্ড এমন ভাবে তৈরি করেন যাতে ইয়ারফোন লাগিয়ে যখন কেউ ওটিটিতে শুনবে, সে যেন ঠিকঠাক এফেক্টটা পায়। তুমি কি সেটা মাথায় রেখেছিলে?
প্রতিম: না। সেরকম করিনি। আমি যখন শুটিং করি, এমনিতেই একটু বেশি ক্লোজআপ নিই কারণ, আমার ভাল লাগে মানুষের এক্সপ্রেশন দেখতে। আর যখন মানুষ ফোনে ছবি দেখে সেক্ষেত্রে একটু ক্লোজআপ দেখা তারাও পছন্দ করে, তো সেটা আমার ছবি বানানোর ক্ষেত্রে হয়ে যায়। কিন্তু সাউন্ডের ক্ষেত্রে আমি সেটা খুব বড়ই রাখার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন: যখন তুমি কোনও অভিনেতাকে নিয়ে কাজ করো, তুমি কি পরিচালক হিসেবে খুব কনসাস ভাবে তাঁর ইমেজটাকে ব্রেক করার চেষ্টা করো? যাঁদের সঙ্গে একাধিক কাজ করেছ, তাঁদের কথা বলছি না।
প্রতিম: কখনও কখনও ইমেজটা ব্যবহার করার চেষ্টাও করি। আমি যখন দেখি যে সেই অভিনেতার আমার পুরো ছবিতে একটা বা দুটো সিন আছে, তখন আমি তাঁকে সেই ভাবেই ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি সেটাও হয়েছে। ইমেজ ভাঙ্গার সুযোগ তখনই বেশি পাওয়া যায় যখন তাঁকে আমি ছবির অনেকটা সময়ে পাব বা তাঁর অনেক সিন থাকে। যেমন অঞ্জন দত্তকে আমি অনেক ভাবে ব্যবহার করেছি কারণ আমি তাঁকে অনেকক্ষণ পেয়েছি। কিন্তু এইখানে ধরো আমি রাইমাকে তিনটে বা চারটে সিনে পাচ্ছি। তখন আমি কী করছি? রাইমাকে যেরকম একজন গ্ল্যামারাস মডার্ন ইন্ডিয়ান উইম্যান হিসেবে আমি রিয়্যাল লাইফে এবং অনেক ছবিতে দেখেছি, সেটাকেই আমি আমার ছবির চরিত্রের সঙ্গে মিশিয়েছি।
প্রশ্ন: আবার আমি লেখায় ফিরি। তুমি একজন সাংবাদিকও। তাই তোমাকে এই প্রশ্নটা আরও করছি। অনেক পরিচালকই দেখা যায় যে স্ক্রিপ্টে সেরকম গুরুত্ব দেন না। এরকমও সম্প্রতি দেখা গেছে যে, কোনও ‘প্রপার’ স্ক্রিপ্ট ছাড়াই শুটিং চলছে। তাঁরা মনে করেন, ওটা সেটে হয়ে যাবে। তুমি স্ক্রিপ্টের উপরে কতটা জোর দাও?
প্রতিম: পুরো ফিল্মমেকিং ব্যাপারটার মধ্যে আমার ফেভারিট পার্ট হচ্ছে স্ক্রিপ্ট। একা বসে লেখাটাই আমার কাছে সব থেকে আনন্দের। তারপরে হয়ত আসবে এডিট, মিউজিক এইসব।

প্রশ্ন: আর শুটিং?
প্রতিম: শুটিংয়ে আমি কখনও খুশি নই। কারণ বাংলা ছবি তোমাকে ১২-১৩ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। সকাল থেকে এসে তোমার মাথায় ঘুরবে যে, আজকে আমাকে এই ছ’টা সিন তুলতেই হবে। তাই এখানে এনজয় করার কোনও সুযোগ নেই। সেই দিক থেকে লেখাটা আমি সব থেকে বেশি এনজয় করি। এবং, কাস্টিং হওয়ার পরে আমি একটা স্পেশ্যাল ড্রাফট করি। ধরো আমি যখন জানি যে, এই চরিত্রটা স্বস্তিকা দত্ত করছে বা অপূর্ব করছে, ওঁদের ভেবে আমি ঠিক করি যে কী কী ছোট ছোট চেঞ্জ করা যাবে যেটা চরিত্রটার সঙ্গেও যাবে এবং সেই অভিনেতাও আরও বেশি ফুটিয়ে তুলতে পারবে। তাই সম্পূর্ণ কাস্টিং হয়ে গেলে আমি একটা ‘ড্রাফট’ করি।
প্রশ্ন: যে প্রশ্নটা জিজ্ঞাসা না করলেই নয়, এবারেও একসঙ্গে চারটে ছবি রিলিজ করছে। তোমার ছবির সঙ্গে আরও তিনটে বাংলা ছবি। এই ব্যাপারটাকে কীভাবে দেখছ?
প্রতিম: এটা একেবারেই প্রযোজকের সিদ্ধান্ত। তুমি যদি সারা বছরে দেখ, তাহলে ‘বহুরূপী’ এবং ‘টেক্কা’…এই দুটো ছবিই প্রযোজককে কিছু পয়সা ফেরত দিয়েছে। দুটো ছবিই রিলিজ করেছে পুজোর সময়। আগের বছরগুলোতেও যদি দেখি, ‘টনিক’, ‘প্রজাপতি’, ‘প্রধান’, ‘কাবুলিওয়ালা’ এগুলো সব বড়দিনের সময় রিলিজ। তাই সম্ভবত প্রযোজক হিসেবে হাসানদা’র মনে হয়েছে এই সময়টায় রিলিজ করলে ছবিটার ব্যবসার সম্ভাবনা তুলনায় বেশি। একই ভাবনা তো সমস্ত প্রযোজকই ভাবছেন। আমার ছবির সঙ্গে যে ছবিগুলো আসছে, তাতে কারোর হয়ত ‘সন্তান’ ট্রেলার দেখে মনে হচ্ছে যে এটা একটু টেলিভিশন কন্টেন্টের মত। আবার আমার মনে হচ্ছে যে ‘সন্তান’ এমন একটা জঁরকে ধরতে চাইছে যেটা হয়ত সমস্ত মানুষের ভাল লাগতে পারে। কারোর আবার মনে হচ্ছে যে ‘খাদান’ আগের দেবের কামব্যাক। আমার আবার মনে হচ্ছে যে ‘খাদান’ হয়ত একটু দক্ষিণী ছবির মত লাগছে, অরিজিন্যালিটির জায়গা থেকে একটু ঘাটতি। সেই জায়গা থেকে দেখলে প্রত্যেকটা ছবিরই কিন্তু নিজস্ব কিছু ভাল দিক আছে আবার খামতিও আছে। আমার ছবিতে যেমন এমন কোনও তারকা নেই যাঁকে দেখার জন্য মানুষ দৌড়ে আসবে। খুব ইন্টারেস্টিং কিছু ব্যাপার রয়েছে কিন্তু দেব বা মিঠুন চক্রবর্তীর মাপের কেউ নেই। যদিও বা বলা খুব মুশকিল, তবু আমার একটা জিনিস ভাল লাগছে যে একট ঝাঁকে বাংলা ছবি আসছে। হয়ত বাংলা ছবির মরসুম হিসেবে দর্শক হলমুখী হবে। যখন শচীন-সৌরভ একসঙ্গে ব্যাট করতে নামতেন, তার যে মজা! শচীনও রান করছে, সৌরভও রান করছে। সেটা হলে খুব ভাল লাগত।

প্রশ্ন: হিন্দিতে কিছু প্ল্যান করছ?
প্রতিম: হিন্দিতে প্ল্যান নয়, ডেভেলপমেন্ট চলছে। হিন্দির বাজারও খুব খারাপ।
প্রশ্ন: স্টার পাওয়ারও জিরো…
প্রতিম: ঠিকই বলেছ। স্টার পাওয়ার জিরো, হলে সিনেমা চলছে না। ওটিটিও ভীষণ কনফিউজড যে ভারতীয় অডিয়েন্সের কথা ভেবে কন্টেন্ট তৈরি করবে নাকি বিদেশি অডিয়েন্সের কথা ভেবে! সব মিলিয়ে এখন একটা ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’ চলছে কলকাতাতে এবং মুম্বইতেও। আশা করছি পরের বছরটা একটু ভাল হবে।
প্রশ্ন: সম্প্রতি প্রসার ভারতী ‘ওয়েভ’ নামে ওটিটি এনেছে। এতে কন্টেন্ট ক্রিয়েটারদের কতটা সুবিধা হবে?
প্রতিম: খুব সুবিধা হবে কিনা জানি না। তবে একটা নতুন প্লেয়ার এলে সবসময়ই সেটা ভাল। আমি শুনেছি অনেকে প্রজেক্ট দিচ্ছে। আমার কাছে যদি আসে, আমি করব। আমি খুবই এক্সাইটেড।