সিনেমা না পেইন্টিং? ছবি হবে! হতাশ পরিচালক সুদীপ্ত
সিনেমার পড়ুয়ারা এক বিশেষ ধরণের ছবির কথা বোঝাতে একটা টেকনিক্যাল শব্দ ব্যবহার করেন। মিজ্-অন-অবিম (Mise-en-abyme)। যাকে দর্শক সাদামাটা ভাবে বলে সিনেমার মধ্যে সিনেমা। এই ধারা কিন্তু দর্শক মহলে বেশ জনপ্রিয়। পরিচালক সুদীপ্ত লাহা তাঁর প্রথম ছবিতে এই ধারার ছবিই বানাতে চলেছেন। ছবির নামেও রয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া, ‘কারণ গ্রিস আমাদের দেশ না অথবা ব্লু-ব্ল্যাক ও ট্রান্সপারেন্ট হোয়াইট’ (Karon Greece Amader Desh Na Athoba Blue-Black O Transparent White)।
আরও পড়ুন: বাংলা ছবিতে এই রকমের পারফরম্যান্স সচরাচর আমরা দেখি না
এই ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনিন্দ্য সেনগুপ্ত, তনুশ্রী চক্রবর্তী, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, গৌরব চ্যাটার্জী, রাজেশ্বরী পাল, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে।

তনুশ্রীর বাড়িতে পেইন্টার কমলেশ্বরের সঙ্গে আলাপ হয় এক হতাশ পরিচালক অনিন্দ্যর। অনিন্দ্য তনুশ্রীর ভাইয়ের চরিত্রে। শিল্প নিয়ে পেইন্টারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তা প্রভাবিত করে পরিচালককে। এদিকে পেইন্টারের না হয়েছে কোনও দিন ছবি বিক্রি আর না হয়েছে প্রদর্শনী! এবার পরিচালক তার সিনেমার নায়ক আর প্রযোজকের সাহায্য নিয়ে পেইন্টারের ছবির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে চায়। এই নায়ক হলেন গৌরব এবং প্রযোজক কৌশিক।
আরও পড়ুন: সাগরপারে শুরু, বাংলায় এবার সাতদিন ‘ফ্রাইডে’!
এবার শেষমেশ কোন ছবি হবে? পেইন্টারের নাকি পরিচালকের? উত্তর আমরা জানি না, ‘কারণ গ্রিস আমাদের দেশ না অথবা ব্লু-ব্ল্যাক ও ট্রান্সপারেন্ট হোয়াইট’। আর হ্যাঁ! বলতে ভুলে গেছি, সুদীপ্তর ছবিতে হতাশ পরিচালকের ভূমিকায় থাকা অনিন্দ্যর চরিত্রের নামও সুদীপ্ত।

পরিচালকের কথায়, “আমার মনে হয় শুধুমাত্র গল্প নয়, মানুষকে আকর্ষণ করে এথিকাল ও মরাল ডিলেমার মধ্যে দিয়ে যাওয়া কোন ব্যাক্তি বিশেষের কন্ডিশন, সিচুয়েশান এবং পারিপার্শ্বিকের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি। সিনেমাটা কতটা ভাল সেটার থেকেও আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটা সম্পূর্ণ ম্যানিপুলেশন বর্জিত সিনেমা বানানো। তাই সিনেমায় কোনরকম ব্যাকগ্রাউণ্ড মিউজিক ব্যবহার করা হয়নি। বেশিরভাগ সিনের মাঝে কোন কাট নেই এবং ক্লোজ শটের ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে।”
আরও পড়ুন:অস্কার কর্তৃপক্ষ বুদ্ধদার উপরে হওয়া কাজগুলো সংরক্ষণ করতে চায়: সোহিনী
এই ছবিতে পরিচালকের কোনও ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক (BGM) ব্যবহার না করা বেশ অন্যরকম সিদ্ধান্ত, অন্তত বাংলা ছবির নিরিখে। তবে বাংলা ছবিতে তেমনভাবে প্রচলিত না হলেও যাঁরা বিশ্ব সিনেমার খোঁজ রাখেন তাঁরা জানেন, হিচকক থেকে কিয়ারোস্তামি হয়ে সিডনি ল্যুমেট একাধিকবার মুন্সিয়ানার সঙ্গে ছবিকে নেপথ্যে শব্দহীন রেখেছেন।

শ্রীমা ক্রিয়েশনের প্রযোজনায় এই ছবির গল্প, চিত্রনাট্য এবং সংলাপ পরিচালক নিজেই লিখেছেন। চিত্রগ্রহণে উত্তরণ দে এবং সম্পাদনার দায়িত্ব সামলেছেন অনির্বাণ মাইতি।